রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ, রক্তশূন্যতা কীভাবে বুঝবেন

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ  রক্তশূন্যতা আমাদের শরীরের একটি সাধারণ সমস্যা এটি পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে প্রায়ই ঘটে। অনেক লোক মনে করে যে রক্তশূন্যতা শুধুমাত্র পর্যাপ্ত আয়রন না থাকার কারণে হয় কিন্তু আসলে অন্যান্য কারণও রয়েছে। রক্তশূন্যতা হলো যখন আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত লোহিত রক্তকণিকা থাকে না। এটি পর্যাপ্ত আয়রন না থাকার কারণে শরীরের রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। যদি আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত না থাকে তাহলে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং খুব অসুস্থ করে তুলতে পারে কখনো কখনো রক্তশূন্যতার কারণে আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই চলুন আজকে জেনে নেয়া যাক, রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ, রক্তশূন্যতার কারন , রক্তশূন্যতার লক্ষণ, রক্তশূন্যতার প্রতিকার ও চিকিৎসা , নারীদের রক্তশূণ্যতার সমস্যা এবং রক্তশূন্যতা হলে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে এমন কিছু তথ্য-তাই শেষ পর্যন্ত পড়ুন তাহলে আপনার অনেক উপকার হবে। 

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ
                                         রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ:

১.  ত্বক এবং চোখ হলুদ হয়ে যেতে পারে।
২.  শরীর খুব দুর্বল লাগতে পারে।
৩.  বুকে ব্যথা অনুভব হতে পারে।
৪.  নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।
৫. সবসময় ক্লান্ত অনুভব করা।
৬.  মাথাব্যথা হতে পারে।
৭.  হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে।
৮.  হাটতে গেলে বুক ধরফর করা।
৯.  হাত-পা এবং শরীরে ফোলা অনুভব হওয়া।
১০. জিহবা ফুলে যেতে পারে।
১১. ক্ষুধার্ত অনুভব না হওয়া।
১২. কোন কাজ করলে অতিরিক্ত পরিশ্রম লাগা।
১৩. জিহ্বায় ঘা হতে পারে।

রক্তশূন্যতার কারন:

আমাদের নানাবিধ কারণে রক্তশূন্যতা হতে পারে। যেমন রক্তের হিমোগ্লোবিন (Hemoglobin) তৈরির অন্যতম বা প্রধান কাঁচামাল হলো আয়রন। আমাদের কোনো কারণে শরীরে আয়রনের উপস্থিতি কমে যায় তাহলে রক্তশূন্যতা বা এনিমিয়া হতে পারে। একে বলে আমাদের আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা বা রক্ত সল্পতা। মেডিকেলের ভাষায় ‘আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া -(iron deficiency anemia)। রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ এছাড়া আমাদের শরীরে ভিটামিন বি এবং ফলিক এসিডের ঘাটতি, দীর্ঘমেয়াদি বিশেষ কিছু  রোগ যেমন, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, কিডনি ফেইলিওর, আর্থ্রাইটিস, লিভার ফেইলিওর, বিশেষ কিছু ইনফেকশন জনিত রোগ সমস্যা যেমন, থ্যালাসেমিয়া, যক্ষা, থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা, ব্লাড ক্যানসার,  রক্ত উৎপাদনকারীর মজ্জার সমস্যা, দীর্ঘ রক্তক্ষরণ, রক্তের লোহিত কণিকা নিজে নিজে ভেঙে যাওয়া ইত্যাদির কারণে রক্তশূন্যতা বা রক্ত সল্পতা হতে পারে।

রক্তশূন্যতা বলতে আসলে কি বোঝায়:

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ রক্ত শূন্য তো আসলে হয় না। রক্ত শূন্যতা বলতে আমরা নির্দিষ্ট করে বুঝি রক্তের হিমোগ্লোবিন নামক যে উপাদানটি সে উপাদানটি যদি নির্দিষ্ট একটি বয়সের এবং নির্দিষ্ট জেন্ডারের জন্য যে মাত্র থাকার কথা তার চেয়ে যদি কমে যায় কারণ আমরা জানি যে রক্তের উপাদানের মধ্যে জলীয় অংশ আছে এবং সেলুলার অংশ আছে।সেলুলার অংশ বা কোষ যে গুলো  এই কোষ কোনার মধ্যে লোহিত কণিকা আছে যেমন  সেত কণিকা আছে, অনুচক্রিকা আছে, কিন্তু সবচেয়ে বেশি যেটা আমরা মনে করি যে দৃশ্যমান রক্তের অংশটি এবং যার কারণে রক্তের রং লাল সেটি হচ্ছে রক্তের হিমোগ্লোবি। 

রক্তের লোহিত কণিকার মধ্যে অবস্থিত  যে হিমোগ্লোবিন এটি রক্তের বলতে পারেন সবচেয়ে ব্যস্ত আমি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলব না আসলে প্রত্যেকটা অংশের গুরুত্বপূর্ণ। এটিকের সবচেয়ে ব্যস্ত অংশ বলে এই অর্থে জীবনটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যে নিরন্তর পুষ্টি এবং অক্সিজেন দরকার সেই জিনিসটি আমাদের রক্তের কোষে কোষে পৌঁছে দেয় এই হিমোগ্লোবিন এই হিমোগ্লোবিন যদি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে কম থাকে তাহলেই আমরা বলি রক্তাল্পতা যেটাকে আমরা বলি রক্তশূন্যতা বা এনিমিয়া। রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ আসলে রক্তের সব উপাদানই রক্তশূন্যতা বলতে নির্দিষ্ট করে বোঝানো হয় রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যদি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে কমে যায় সেটিই রক্তশূন্যতা। 

বিভিন্ন বয়সের ক্ষেত্রে রক্তশূন্যতা কেমন থাকতে পারে:

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে আমরা স্বাভাবিক মাত্রা বলি যে এটি মোটামুটি ১৩ থেকে ১৭ এর মধ্যে এটি নরমাল, আবার একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর ক্ষেত্রে এই হিমোগ্লোবিনের মাত্রাটাই আমরা বলছি মোটামুটি ১২ থেকে ১৫ এর মধ্যে, আবার একটি শিশুর ক্ষেত্রে ধরুন এক বছর বয়স থেকে ১২ বছর বয়স পযন্ত এটি আবার সাড়ে ১১ থেকে ১৫ এর মধ্যে। এটি হচ্ছে ওই বয়সের সমস্ত মানুষ বা ওই জেন্ডারের সমস্ত মানুষের মধ্যে পরীক্ষা করে যেটি স্বাভাবিক মাত্রা দেখা যায় তার ওপর প্রতিষ্ঠিত একটি রেফারেন্স লেভেল এবং এই বয়স এবং এই জেন্ডার এর জন্য যে মাত্রাটা এর চেয়ে যদি কোন কম থাকে সেটিকেই আমরা বলছি রক্তশূন্যতা। 

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ রক্ত শূন্যতা সব সময় যে লক্ষণ সই হবে এমন কোন কথা নেই। লক্ষণ ছাড়া হঠাৎ পরীক্ষা করেও দেখা যেতে পারে একটু কম আছে। তো রক্তশূন্যতা আমরা বলছি একটা মান দিয়ে আর একটা যখন আমার রক্তশূন্যতা সংশ্লিষ্ট লক্ষণ দেখা দেবে সেটা সাধারণত তথ্য-শূন্যতার মাত্রা একটু বেশি হলেই হয়। কিন্তু আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে কমে গেলেই সেটাকে রক্তশূন্যতাই বলবে সেটি লক্ষণ তৈরি করুক আর না করুক।

রক্তশূন্যতার প্রতিকার ও চিকিৎসা:

১. রক্তশূন্যতার সময়ে চিকিৎসার সাহায্য অপরিহার্য। রক্ত সংস্কার, রক্ত প্রতিস্থাপন, চিকিৎসায় রক্তদান ইত্যাদি প্রয়োজন হতে পারে।

২. যদি আপনি স্বাস্থ্যকর এবং রক্তদান করতে সম্মত হন, তবে আপনি রক্তদান করে অন্যকে জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারেন।

৩. রক্তশূন্যতা প্রত্যাশা করে নিয়ে আসা যায় না। তাই যেকোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনায় অবিলম্বে চিকিৎসা প্রাপ্ত করা জরুরি।

৪. সমাজের মাধ্যমে লোকেদের রক্ত দান করার প্রতি উৎসাহিত করা যায়। স্থানীয় রক্তদান কেন্দ্র, হাসপাতাল এবং প্রতিষ্ঠানিক অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা আয়োজন করে রক্তদাতা সংখ্যা বাড়ানো যায়।

৫. রক্তদানের প্রক্রিয়া সুসংঘটিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানগুলির কাজের সক্ষমতা বাড়ানো উচিত।

 ৬. রক্তদানের প্রক্রিয়াটি সহজ এবং সুরক্ষিত হওয়া উচিত, যাতে রক্তদাতাদের প্রতিরক্ষা করা যায় এবং তাদের সম্পূর্ণ উৎসাহ থাকে।

নারীদের রক্তশূণ্যতার সমস্যা:

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ আমরা আসলে প্রায় সময় নারীদেরকে বলি যে খুব টায়ার্ড লাগে খুব দুর্বল লাগে বুক ধরফর করে আমরা তখন একটা (CBC) কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (Complete blood count)  করতে দেই। দেখি যে হিমোগ্লোবিন টা অনেক কম কারো আসে সাড়ে আট, কারো নয়, কারো দশ, কারো ১১-১২ যেটা হওয়ার কথা সেটা আসলে আমরা খুব কমই পেয়ে থাকি। আমাদের দেশে নারীরা যে রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকেন তার মেইন কারণ হচ্ছে আয়রন ডিফিসিয়েন্সি। আয়রন রিফিসিয়েন্সির কারণে যে রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে দেখা যাচ্ছে আমরা প্রথম থেকে আমাদের আয়রনের স্টোরেজ টা অনেক কম দেখা যাচ্ছে কেন জানি নারীদেরকে আয়রন কন্টিনিং যে খাবারগুলো যেমন হচ্ছে প্রোটিনযুক্ত খাবার গুলো যেমন হচ্ছে প্রোটিনযুক্ত খাবার কিংবা আয়রন রয়েছে সেটা ১ হচ্ছে কম খাওয়া হয়। 

দ্বিতীয় যেটা হয় যে প্রোটিন জাতীয় খাবার ছাড়া কিন্তু এই রক্তটা হিমোগ্লোবিটা কাজ করতে পারে না। প্রোটিন জাতীয়ও খাবারও মেয়েরা কম পেয়ে থাকে। রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ তো আমাদের দেশের নারীরা রক্তশূন্যতায় ভোগে না এমন খুব কমই রয়েছে এবং সেটা  আসলে খুব বেশি ধরা পড়ে যখন সে প্রেগনেন্সিতে যায় তখন। তো প্রেগনেন্সি যখন স্টার্ট হয়ে গেছে তার বাচ্চা তো তার কাছ থেকে সম্পূর্ণটা নিয়ে নয় মাসে একটা বাচ্চা তৈরি হবে। কিন্তু সেই মার কাছে যদি নাই থাকে তাহলে সে বাচ্চাটা কোথা থেকে পাবে। তো দেখা যায় যে একে তো মা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তার গর্ভে সন্তানের পুষ্টি কিংবা তার যে গ্রথ সেটাও কিন্তু কম হচ্ছে রক্তশূন্যতার জন্য।

এখনই রক্তশূন্যতার জন্য আমরা কি করতে পারি:

রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ দেখা যায় যে  অনেক মেয়েদের প্রতি মাসে অনেক সময় খুব ব্লিডিং থাকে। সেই কারণে তার একটা লস প্রতিমাসে বেশি। সেই কারণে সে হয়তবা রক্ত রক্তশূন্যতায় ভুগছে।   তাহলে যেটা করতে হবে তার ব্লিডিং এর কারণটা বের করে তাকে ট্রিটমেন্ট দিতে হবে দ্বিতীয়তঃ তাকে আয়রন কন্টিনিং ফুড খেতে হবে। আয়রন কন্টিনিং ফুড গুলো কি যেমন, আমরা আমাদের আশেপাশে যে শাক সবজি গুলো দেখি যেগুলো কাটলে কালো হয়ে যায় হাত কালো হয়ে যায় সেটার সাথে আমাদের প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে, কচু রয়েছে, লতি রয়েছে আমরা দেখি পেয়ারা কাটলে কালো হয়ে যায় 

এছাড়া বেদানা, আনার এগুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে এবং সেইসাথে আমরা জানি যে গরু, মুরগি, খাসির কলিজা তারপরে হচ্ছে মাংস, ডিম এগুলো সবগুলোতেই কিন্তু আয়রন রয়েছে কচু জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণ আইরন রয়েছে। রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ থেকে বাঁচতে সেই আয়রন যুক্ত খাবার গুলো আমরা খাব এবং খাবার পরেও যদি দেখি যে না তার হিমোগ্লোবিন টা বাড়তেছে না সে ক্ষেত্রে তাদেরকে মেডিসিনের প্রয়োজন পড়বে। তখন অবশ্যই একজন ডাক্তারের কাছে শরণাপন্ন হয়ে মেডিসিন খেতে হবে।

সর্তকতা এবং শেষ কথা:

রক্তশূন্যতা পরিস্থিতি অত্যন্ত জরুরি হলে স্থানীয় হাসপাতালে নিকটস্থ তাড়াতাড়ি চিকিৎসা প্রাপ্ত করা উচিত।

Post tag:

রক্তশূন্যতা দূর করার ঘরোয়া উপায়
মেয়েদের রক্তশূন্যতার লক্ষণ
শিশুদের রক্তশূন্যতার লক্ষণ সমূহ
রক্তশূন্যতা দূর করার উপায়
শরীরে রক্ত কম হলে কি কি সমস্যা হয়
রক্তশূন্যতা দূর করার ঔষধের নাম
শরীরে রক্ত কমে গেলে কি হয়?
১ লিটার রক্ত ​​কমে গেলে সুস্থ হতে কতদিন লাগে
শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়
হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়
হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ
রক্তশূন্যতার লক্ষণ
শরীরে রক্ত কম হওয়ার লক্ষণ
রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি সমস্যা হয়
অ্যানিমিয়া দূর করার উপায়
কোন মাছ খেলে শরীরে রক্ত হয়
রক্তশূন্যতার লক্ষণ ও প্রতিকার
হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার লক্ষণ
অ্যানিমিয়ার লক্ষণ
রক্তস্বল্পতা দূর করার উপায়
অ্যানিমিয়া কিসের অভাবে হয়